সর্বাধিনায়ক সুভাষচন্দ্র ঘনিষ্ঠ অনুগামী জ্যোতিষচন্দ্রকে প্রয়ান দিবসে সশ্রদ্ধ প্রনাম।

               সুস্মিত মিশ্র
নেতাজি সুভাষচন্দ্রের একনিষ্ঠ অনুরাগীদের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন অন্যতম বিপ্লবী। তিনি জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদার।তিনি  ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক 
সুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ অনুগামী,ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্যতম কর্ণধার ।  

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২০ এপ্রিল  বাংলাদেশের ময়মনসিংহে জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদারের জন্ম।অত্যন্ত মেধাবী ও কৃতি ছাত্র ছিলেন তিনি। আইএসসি পাশের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পদার্থ বিজ্ঞানে সাম্মানিক সহ
 বিএসসি ও এমএসসি পাশ করেন।তিনি বিশ্ববিশ্রুত বিজ্ঞানী অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অত্যন্ত প্রিয় ছাত্র ছিলেন। তবে ছাত্রাবস্থাতেই বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষের সংস্পর্শে এসে বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সে যোগ দেন।১৯২৮খ্রিস্টাব্দে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে মেজর সত্য গুপ্তের মাধ্যমে স্বাধীনতা আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে।সেই পরিচয় মৃত্যুর আগের মুহুর্ত অবধি নিজের মনে ও মননে গেঁথে রেখেছিলেন জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদার।

সুভাষচন্দ্রের একনিষ্ঠ অনুরাগী জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদার ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্যতম কর্ণধার ছিলেন। সুভাষের মহানিষ্ক্রমণের সময়ও তিনি কারাবন্দী হন। এভাবে বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযান ও আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি চৌদ্দ বৎসর কারাবাস করেন।১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের জ্যোতিষচন্দ্র প্রথম পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার সদস্য নির্বাচিত হন। বিগত দিনের নানা কারণে তার শ্রবণ শক্তির সমস্যা হয়েছিল এবং শেষের দিকে তিনি সম্পূর্ণ বধির হয়ে যান। অকৃতদার অগ্নিযুগের বিপ্লবী জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদার ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় প্রয়াত হন।

সুভাষচন্দ্রের ভাবাদর্শে সামনে রেখে তিনি পরবর্তীতে কর্মপ্রবাহ জারি রাখেন নিশান পত্রিকা প্রকাশ ও 'সুভাষ সংস্কৃতি পরিষদ' গঠনের মাধ্যমে। সুভাষ সংস্কৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা,পরামর্শদাতা ও সংগঠক ছিলেন তিনি।

তিনি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা,বিজ্ঞানী মন ও দৃষ্টিকোণ থেকে সুভাষ চন্দ্রকে ব্যাখ্যা করে বলেছেন সুভাষবাদে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।কে হিন্দু , কে মুসলিম , কে খ্রীষ্টান বা কে অন্য কোনো ধর্মালম্বী তাতে কিছু যায় আসে না। তা বিচার্য নয় ।সমাজে বর্ণভেদ বা অনুন্নত শ্রেণী বলে কিছু থাকা কাম্য নয়। নারী সর্বতোভাবে পুরুষের সমমর্যাদার অধিকারিণী।বলেছেন সুভাষবাদে মানুষের মর্যাদা ও পূর্ণ স্বাধীনতার আছে
চারটি স্তম্ভ - বিবেকের মুক্তি, রাষ্ট্রিক স্বাধীনতা বা গণতন্ত্র , অর্থনৈতিক গণতন্ত্র বা সমাজবাদ  আর মানুষের মর্যাদা।

ভাবতে অবাক লাগে তন্নতন্ন করে খুঁজেও স্বাধীনতার ৭৫ বছর পুর্তি বর্ষেও এই মহান মানুষটির একটাও ছবি পাওয়া গেল না

হে বিপ্লবী, স্বাধীনতা আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ অনুগামী  জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদার প্রয়ান দিবসে এখন সংবাদ পরিবার আপনাকে জানায় শতকোটি প্রনাম 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন