"ডিন অব ইন্ডিয়ান জার্নালিজম" তুষারকান্তি ঘোষকে জন্ম দিবসে সশ্রদ্ধ প্রনাম।

                                  সুস্মিত মিশ্র
অবিভক্ত ভারতে দেশীয়দের মালিকানায় প্রকাশিত প্রাচীনতম ইংরেজি দৈনিক ''অমৃতবাজার পত্রিকা''।১৮৬৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ''অমৃতবাজার'' সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ শুরু হয়।  
পত্রিকাটি দ্বি-ভাষিক (এক পৃষ্ঠা বাংলা এবং এক পৃষ্ঠা ইংরেজি ভাষায়) হিসাবে প্রকাশিত হতো। নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কৃষকদের স্বার্থে লড়াই করার উদ্দেশ্যেই মূলত পত্রিকাটির প্রকাশ।
ইংরেজ সরকার ১৮৭৮ সালে ভার্ণাকুলার প্রেস অ্যাক্ট নামের কালাকানুন প্রবর্তন করলে পত্রিকাটি পুরোপুরি ইংরেজি পত্রিকায় পরিণত হয়। ১৮৯১ সালে পরিণত হয় ইংরেজি দৈনিকে।১৯২৮ সালে মাত্র ৩০ বছর বয়সে সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তুষারকান্তি ঘোষ।আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় বাঙালি সাংবাদিক ও লেখক। ষাট বৎসরের বেশি সময় ধরে আমৃত্যু
ইংরাজী দৈনিক অমৃতবাজার পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি।

১৮৯৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্ম হয় অমৃতবাজার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা খ্যাতনামা সাংবাদিক শিশির কুমার ঘোষের ছেলে তুষারকান্তির।তুষারকান্তি ঘোষ কলকাতার টাউন স্কুল,
হিন্দু স্কুল ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ বঙ্গবাসী কলেজে পড়াশোনা করেছেন।১৯২০ খ্রিস্টাব্দে বি.এ পাশের পর তিনি অমৃতবাজার পত্রিকায় যোগ দেন এবং ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে তার সম্পাদক হয়ে আমৃত্যু এই পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর হাত ধরেই বাংলা দৈনিক "যুগান্তর" প্রতিষ্ঠা পায়।ষাটের দশকের গোড়ার তারই সম্পাদনায় সাপ্তাহিক "অমৃত" প্রকাশিত হয়েছে।

সাংবাদিকতা ছাড়াও তিনি কাল্পনিক উপন্যাস, ছোটদের পড়ার বই রচনা করেছেন। প্রাচীন বাংলা গান, বিশেষত টপ্পা ও কীর্তন গানে তার যথেষ্ট দক্ষতা ছিল। তার রচিত গ্রন্থ -
বিচিত্র কাহিনী
আরও বিচিত্র কাহিনী
চিত্র-বিচিত্র
 সাহিত্য ও শিক্ষায় তার অবদানের জন্য ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারত সরকারের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ লাভ করেন। তুষারকান্তি ঘোষ হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং স্বল্পদিনের
অসুস্থতায় ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট পরলোক গমন করেন।

ঘোষ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সাংবাদিক হিসাবে সর্বাধিক পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তিনি মহাত্মা গান্ধী এবং অহিংস আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন।১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে বিচার ও শাসনবিভাগ
সংক্রান্ত একটি সম্পাদকীয় লিখে কারাবরণ করেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে সাংবাদিক হিসাবে তিনি সারা পৃথিবী ঘুরেছেন বার বার। দেশ বিদেশের বহু বিখ্যাত রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় ছিল।
তিনি বিশ্বের প্রখ্যাত সাংবাদিকতার সংস্থা - 'ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট' এবং 'কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়ন'-এর অন্যতম নেতা ছিলেন।তুষারকান্তি ঘোষ ভারতের সাংবাদিকতা জগতে "গ্রান্ড
ওল্ড ম্যান অব ইন্ডিয়ান জার্নালিজম" এবং দেশের মুক্ত সংবাদমাধ্যমে তার অবদানের জন্য "ডিন অব ইন্ডিয়ান জার্নালিজম" নামে পরিচিত ছিলেন।

ভারতীয় সংবাদ জগতের হে গুরুদেব আপনাকে এখন সংবাদ পরিবারের শ্রদ্ধাঞ্জলী

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন