বিজেপির উন্নয়ন,১১৪৯ টাকার গ্যাসে ফুটে বিনে পয়সার চাল:মমতা

 



বাংলার বদনামকারীদের বাংলা ছাড়া করার হুশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।দিঘার হেলিপ্যাড ময়দানে সভার শুরু থেকেই বিজেপিকে আক্রমন করেছেন । তারপর ধীরে ধীরে সভা যত এগিয়েছে তত বেশী করে বিজেপি-সিপিএমের পাশাপাশি নাম না করে অধিকারীদেরকেও আক্রমনে আক্রমনে ভরিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


বাম আমলে সিপিএমের সন্ত্রাসের কথা স্মরন করিয়ে বলেছেন খেজুরি, তমলুকের কথা মনে আছে তো? আমার মনে আছে আমি হলদিয়ায় একটি মিটিংয়ে গিয়েছিলাম।আমায় মাইক্রোফোন পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেয়নি। আমি কলকাতা থেকে মাইক নিয়ে গিয়েছিলাম। নন্দীগ্রামে সূর্যদয়ের পর যখন আমায় রাস্তায় আটকে দেয়। আনিসুর বলে একটি ছেলে ছিল। সে এখন জেলে। আমি ওকে বলি তোর বাইক আছে? বলল হ্যাঁ। সেই সময় আমায় তমলুক-নন্দীগ্রামে যেতেই হত। কারণ তমলুক হাসপাতালে অনেকে ভর্তি। তার আগের দিন কালীপুজো ছিল। আমার মনে আছে, সুফিয়ান ফোনে আমায় বলে বন্দুকের শব্দ শুনুন দিদি। সুফিয়ান-পিযুষ ভুঞ্যাদের বাদ দিয়ে নন্দীগ্রাম হয় না। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে।” 


মমতা বলেন, “সবাইকে এক হয়ে চলচতে হবে। আমি একা করব আর কেউ করবে এমনটা হবে না। পঞ্চায়েতে দক্ষ কর্মী চাই। ভাল মানুষ চাই। একটা পার্টির একজন টিকিট পাবেন। কেউ না পেলে আবার বিজেপির কোটায় দাঁড়াবেন না। আমরা অন্যভাবে পাশে থাকব। এটা পার্টি দেখবে। উচ্চ-নেতৃত্ব এলাকায় যান।”


আন্দোলনের দিন গুলো স্মরন করিয়ে বলেছেন, “আমি আনিসুরের মটোর বাইকে চড়ে গ্রামে-গ্রামে যাচ্ছিলাম। তখন সেখানে সিপিএম এসে উপস্থিত হচ্ছে। আর গালাগালি দিচ্ছে। এক অক্ষর থেকে বারো অক্ষর পর্যন্ত গালাগালি দিচ্ছিল। তার আগের দিন কোলাঘাটে পেট্রল বোমা রেখেছিল মারার জন্য। সেই সময় রাজ্যপাল গোপাল কৃষ্ণগান্ধী রাত্রিবেলা ফোন করে আমায় খবর দিয়ে বলেছিলেন, আপনি ওইখান থেকে চলে যান। ওরা পেট্রল বোমা মেরে উড়িয়ে দেবে। এরপর রাজ্যপালের কথা শুনে কোলাঘাট গেষ্ট হাউসে উঠলাম। দেখালাম বড়-বড় বাস দিয়ে গেস্ট হাউসের দরজা বন্ধ করা। আমি তো গ্রামের মেয়ে। জন্ম গ্রামে। আমি সাঁতার কাটতে পারি, গাছে উঠতে পারি। ধান কাটতে পারি, তুলতে পারি, মাছ ধরতে পারি। তাই ওরা কী করবে? আমি ডাবল ডেকার বাস বেয়ে উঠে লাফ দিয়ে ঢুকলাম। ওই রাতে লাগেজ নিয়ে ঢুকলাম। পরের দিন আমরা চালাকি করে ভিতরের রাস্তা দিয়ে এলাকায় গেলাম।” বলেন, “তমলুক থেকে চণ্ডীপুরে পৌঁছই। মার খেতে-খেতে এগোই। ঢিল খেতে- এগোলাম। নন্দীগ্রামে টিয়ার গ্যাস চালাল। তার আগে আমি সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে অনশন করেছিলাম। আমার শরীরের অনেক অঙ্গ ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। আমার বারণ ছিল। আমি যেন রাস্তায় না বের হই। আমি নন্দীগ্রামে অজ্ঞান হয়ে যাই। নন্দীগ্রাম হাসপাতাল থেকে ওরা আমায় অক্সিজেন সিলিন্ডার সমেত কলকাতায় পৌঁছে দিল।”


এরপরেই সুর চড়িয়ে সিপিএমকে আক্রমন করেন “আজকে সিপিএম বড়-বড় কথা বলছে। খেজুরিতে সুজাতা নামের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করে। ওরা বডি পুড়িয়ে দিয়ে বলে মেয়েটির বাবা ধর্ষণ করেছে।” বলেন "সিপিএমের সেই হার্মাদরা,এখন বিজেপির ওস্তাদ হয়েছে।"


নাম না করে অধিকারী পরিবারকে তুলোধোনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “খাইয়ে পরিয়ে এদের মানুষ করেছি। এরা ক্ষমতালোভী। ভেবেছিল, যাই দিল্লি দখল করে আসি।” নাম না করে অধিকারীদের ফের গদ্দার বলে কটাক্ষ করেন মমতা। 


বলেন, “মানুষের ঘরে যেমন ভাল সন্তান জন্মায়। তেমন কুলাঙ্গারও জন্মায়। এদের কাজ অশান্তি করা।এখনও পর্যন্ত এক হাজার ছেলে জেলে আছে। যেদিন তৃণমূল তৈরি হয়েছিল তখন অখিল গিরি দাঁড়ায় কন্টাই থেকে ওই বাবুরা নয়। ওরা ছাগলের তৃতীয় ছানা হয়ে ছিল। এরা ক্ষমতা দেখে। বাংলা দখলের ক্ষমতা নেই দিল্লি দখল করবে। এই কুলাঙ্গারদের কাজ দাঙ্গাগিরি করা।" 


বলেন, “এ জেলা ক্ষুদিরামের জেলা। মাতঙ্গিনী হাজরার জেলা। আজকে লজ্জা লাগে এখানকার কিছু হার্মাদ আমাদের থেকে সব কিছু নিয়েছে। ওদের হাত থেকে আমরা চাকরি গুলো দিয়েছিলাম। ওরা আমাদের হাত থেকে চাকরি নিয়ে বিক্রি করেছে। আমরা জানতাম না। পুরুলিয়ায় একটাও দেয়নি। ওইখানকার চাকরি এখানে বেচে দিয়েছে। আজকে সিবিআই ইডি নিয়ে বড় বড় কথা বিজেপি নেতাদের।”


গত বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে কারচুরি প্রসঙ্গ টেনে বললেন, “নন্দীগ্রামে ভোট লুট হয়েছে। বিজেপি যে কটি আসন পেয়েছে, জানবেন সব কটি আসনে লুট হয়েছে। ভোটের গণনার দিন তিনঘণ্টা কেন লোডশেডিং হয়েছিল, তার হিসেব আমরা চাই।” 


কেন্দ্রের বঞ্চনা আর মুল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে বলেন  “আমি ৪৮ ঘণ্টা ধরনায় বসলাম। আর তো এক বছর টিমটিম করে জ্বলবি। তারপর বিদায় নিবি ভারত থেকে। ১১৪৯ টাকার গ্যাসে ফুটছে বিনা পয়সার চাল। বাহ নন্দলাল।"



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন