১৪ মার্চ গদ্দাররা মাঠে ছিলো না,লুকিয়ে বসেছিলো:মমতা

 





কেন্দ্রের সরকারকে ‘বেইমান, লুটেরা, দাঙ্গাবাজ, চোর-ডাকাত’  বলে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে সোমবার সরকারি পরিষেবা প্রদান  অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


রাজ্যের বকেয়া নিয়ে দু’দিনব্যাপী ধরনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের পাশে ধরনা করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। এদিনে মেদিনীপুরের সরকারি অনুষ্ঠান থেকেও সেই বকেয়া ইস্যুতেই সরব হলেন তিনি।নাম না নিয়ে আক্রমন করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একসময় খেজুরিতে ঢোকা যেত না। সিপিএম-এর অত্যাচারে মানুষ অত্যাচারিত ছিল। আমার একজন ছাত্রী বন্ধুকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছিল। এরপর তাঁর বাবার নামে দোষ দেওয়া হয়েছিল। সিপিএম গুলো এখন বিজেপি হয়েছে। আমাদের পড়ুয়াদের জেলে ঢুকিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসার নামে জেলে ঢুকিয়েছে। ভাবছে এইভাবে চিরদিন চলে যাবে।”







বলেন, “নন্দীগ্রামে সূর্যোদয়ের নামে দশদিন কাউকে বেরতে দেওয়া হয়নি। ১৪ মার্চ যখন গুলিতে মারা গিয়েছিল, সেই সময় খেজুরি দিয়ে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হত না। সেই সময় গদ্দাররা মাঠে ছিল না। লুকিয়ে বসেছিল। আমি সেই সময় ২৬ দিন অনশন করেছিলাম। ১৪ মার্চের গুলিকাণ্ডের পর আমি ছুটে এসেছিলাম।”


বাম আমলে সিপিএমের অত্যাচার আরো স্মরন করিয়ে মমতা বলেন, “চণ্ডীপুরে আমার গাড়ি আটকে পেট্রল বোমা মারতে গিয়েছিল। কোলাঘাটে আমার গাড়িতে মদের বোতল ছোড়া হয়েছিল। আমার উপর অনেক অত্যাচার হয়েছে। আমি যত দিন বাঁচব আমার আন্দোলন কেউ রুখতে পারবে না। আমার সংগ্রামী জীবন কেউ রুখতে পারবে না। আমি মানুষের সঙ্গে ছিলাম আছি থাকব।”


এক কালের হার্মাদেরা এখন বিজেপি বলে দাবি করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সিপিএম-এর আমলে দেখছি গুন্ডাবাজি, পুকুরে বিষ মিশিয়ে দেওয়া, মানুষের পা কেটে দেওয়া, মানুষকে বয়কট করা, নরমুন্ডু নিয়ে খেলা করা। আর বিজেপির আমলে দেখছি দাঙ্গাবাজি।”


এর পরেই শুভেন্দু অধিকারীর নাম মুখে না নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখন যাঁরা বলছে নন্দীগ্রামে ঢুকতে দেব না। এখানকার ছেলেমেয়েদের জেলে পাঠিয়েছে। নির্বাচনের পরে নাকি বাবুর গায়ে আঁচড় লেগেছে। একটুও লাগেনি। নন্দীগ্রামে ভোটে লড়তে এসে ওরা আমার পা ভেঙে দিয়েছিল। আমার পায়ে এখনও দাগ রয়েছে। ভাল হয়নি। পুরো ফুলে গিয়েছিল। তারপরও আমি চ্যালেঞ্জ করে হুইলচেয়ার নিয়ে মিছিল করেছিলাম।”


সেই সাথে অধিকারীদের নাম মুখে না নিয়ে কটাক্ষ করেছেন “যাঁরা আমাদের থেকে খেয়ে গিয়ে এখন আমাদের বদনাম করছেন আমি তাঁদের জন্য শুধু বলি ঈশ্বর-আল্লা তেরো নাম, সবকো সুমতি দে ভগবান, আমি বলি আল্লা তালা দোয়া করো যেন আমি সহ্য করতে পারি, ঈশ্বরকে বলি যেন সহ্য করতে পারি।”


কেন্দ্রের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বিমাতৃসুলভ আচরনের অভিযোগ করেছেন ,”টাকা দিচ্ছে না। দাঙ্গা বাঁধাচ্ছে। টাকা দিচ্ছ না কেন, কৈফিয়ৎ দাও।”


তাঁর অভিযোগ, ১৭ লক্ষ মানুষের টাকা দেয়নি কেন্দ্র। রাস্তা তৈরি, আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজের টাকাও আটকে রেখেছে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, “পাপিষ্ঠ ওরা। ওদের অভিষ্ট পূর্ণ হবে না।” সদর্পে তাঁর ঘোষণা, “পান্তা ভাত খেয়ে থাকব। তবু সিপিএম-বিজেপির কাছে মাথা বিক্রি করব না।”


রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন "কেন্দ্র টাকা না দিলেও রাজ্য নিজের টাকায় ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা করছে।কাজ পাবেন ৪০ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডার।উন্নয়ন থামবেনা,কোন প্রকল্পই থামবেনা ।  সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন,এর পর ২৪ সালে ওদের ভোট।বাংলা থেকে সিপিএম-বিজেপি লেজ গুটিয়ে পালাবে।"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন