"আর নীরবতা পালন নয়,চিড়া-গুড়-ত্রিপলের ভিক্ষাও নয়"

অবিলম্বে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে অর্থ বরাদ্দ করে আগামী বর্ষার পূর্বে কাজ শুরু সহ সাহেবঘাট ও বন্দরে কংক্রিটের ব্রীজ নির্মানের দাবীতে বানভাসি ভুক্তভোগীদের ঘাটালে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ

বহু প্রতীক্ষিত"ঘাটাল মাস্টার প্লানে"অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের আশ্চর্যজনকভাবে নীরবতার প্রতিবাদে অবিলম্বে অর্থ বরাদ্দ করে আগামী বর্ষার পূর্বে শিলাবতী নদী এলাকায় খনন কাজ শুরু সহ শীলাবতীর উপর সাহেবঘাটে ও রূপনারায়নের বন্দর এলাকায় কংক্রিটের ব্রীজ নির্মানের দাবীতে আজ ১১ অক্টোবর ঘাটালে বিক্ষোভ দেখালেন-ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি। বিক্ষোভকারীরা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হয়ে প্রথমে মহকুমা শাসক অফিসে ও পরে মহকুমা সেচ দপ্তরে বিক্ষোভে সামিল হন। শেষে বিডিও অফিস চত্বরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। কমিটির পক্ষ থেকে তিন আধিকারিকের নিকট স্মারকলিপিও জমা দেন। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক, দেবাশীষ মাইতি, সাহেবঘাট ব্রীজ নির্মান সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কানাই লাল পাখিরা ও ঝাড়েশ্বর মাজী, বন্দর ব্রীজ নির্মান সংগ্রাম কমিটির সভাপতি বলাই চন্দ্র পাড়ুই, যুগ্ম সম্পাদক দেবব্রত মন্ডল ও মদন চন্দ্র রম প্রমুখ। 
      কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক ও দেবাশীষ মাইতি বলেন, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৩ টি ব্লকের স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রায় ১৬৫০ বর্গ কিমি এলাকার আনুমানিক কুড়ি লক্ষাধিক মানুষকে বাৎসরিক বন্যার হাত থেকে রেহাই দিতে তৈরি হয়েছিল 'ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান'। গত ১৯৮২ সালে তৎকালীন রাজ্য সেচমন্ত্রী শিলাবতীর পাড়ে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করলেও মাস্টার প্ল্যানের কোন কাজ দীর্ঘদিন না হওয়ায় ২০০১ সালে ঘাটাল মহকুমাবাসী আন্দোলন গড়ে তুলেন। ফলস্বরূপ নতুন করে মাস্টার প্ল্যান পুনর্মূল্যায়ন করা হয়। ১৭৪০ কোটি টাকার ওই সংশোধিত প্রকল্পের প্রথম ধাপে কাজ হওয়ার কথা ১২১৪ কোটি ৯২ লক্ষ টাকার। 
          আশ্চর্যের বিষয়, ২০১৫ সালে গঙ্গা বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও কেন্দ্রীয় সরকারের জলসম্পদ মন্ত্রক স্কীমটিতে অনুমোদন দিলেও আজো কেন্দ্রীয় সরকার কোন অর্থ বরাদ্দ করেনি। গত ২০২২ সালে ইনভেস্টমেন্ট ক্লিয়ারেন্স কমিটির ছাড়পত্র পাওয়াকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রের শাসক দলের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ঘাটালে এসে শোরগোল ফেলে দিয়ে বললেন, টাকা মঞ্জুর হয়ে গেছে। কাজ শুরু হলো বলে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এখনো অর্থ মঞ্জুর তো দূরের কথা, কেন্দ্রীয় ইন্টার মিনিস্টিরিয়াল কমিটির ছাড়পত্রই পাওয়া যায়নি। 
        কমিটির যুগ্ম সম্পাদকদ্বয় আরো বলেন, দুই মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দারা আশা করেছিলেন- চলতি বছরে কেন্দ্র ইন্টার মিনিস্টিরিয়াল কমিটির ছাড়পত্র দিয়ে অর্থ বরাদ্দ করবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার নীরবতা পালন করায় দুই জেলাবাসী হতাশ হয়েছেন। ফলস্বরূপ গত সপ্তাহের বর্ষায় মহকুমার বিস্তীর্ন অংশ বন্যাকবলিত হয়ে সর্বস্বান্ত হলেন। কয়েকজন মারা গেলেন। ফসল সহ লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পদহানি হল। রাস্তার ক্ষয়ক্ষতি সহ কয়েকদিন জনজীবন স্তব্দ হয়ে গেল। অথচ উভয় সরকারের কোন হেলদোল নেই। 
নারায়নবাবু বলেন,উভয় সরকারের এই মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ না করার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে অর্থ বরাদ্দ করে আগামী বর্ষার পূর্বে শিলাবতী এলাকায় কাজ শুরু সহ সাহেবঘাট ও বন্দর এলাকায় কংক্রিটের ব্রীজ নির্মানের দাবীতে আমরা বাধ্য হয়েই আজ ঘাটালে বিক্ষোভ অভিযানের কর্মসূচি সংগঠিত করেছি। ওই কর্মসূচির মাধ্যমে বন্যা ও জলযন্ত্রনাক্লিস্ট মানুষজন তাদের ক্ষোভের কথা ঘাটালের এস ডি ও/বি ডি ও/সেচ দপ্তরের এস ডি ও কে তুলে ধরেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন