অনাথ আশ্রমে গিয়ে ছেলের জন্মদিন পালন করলেন শিক্ষক আলোক মাইতি।

চেনা ছকের বাইরে গিয়ে পালিত হলো জন্মদিনের অনুষ্ঠান। দশম শ্রেণীর রাকেশ বালা, সপ্তম শ্রেণীর শুভ মিশ্র, মনোরঞ্জন চক্রবর্তীরা গোটা সারাদিন কাটালো অন্যভাবে। অনাথ আশ্রমের আবাসিক হয়েও আনন্দ উচ্ছ্বাসে কাটলো সারাটা দিন। যা সচরাচর মেলে না তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে। আসলে নিজেদর ছেলের জন্মদিন অনাথ আশ্রমের এইসব আবাসিক ছেলেদের সঙ্গে পালন করলেন রাধাবল্লভচক সারদাময়ী বিদ্যাপীঠের রসায়নের শিক্ষক আলোক মাইতি ও তাঁর স্ত্রী ঝুম্পা মাইতি। তাঁদের ছেলে অদ্রীশ মাইতি ৬ বছরে পা দিয়েছে এদিন। সেই উপলক্ষে বাড়িতে গতানুগতিক ধারায় জন্মদিন পালনের চেষ্টা না করে তমলুকের দামোদরপুর উৎসাহী যুবক সংঘের পরিচালিত অনাথ আশ্রম 'আনন্দ আশ্রমে' গিয়ে পালন করলেন শুভ জন্মদিন।কন্যা পাউলি, পুত্র অদ্রীশ, স্ত্রী ঝুম্পা সহ সপরিবারে উপস্থিত ছিলেন আলোকবাবু। দুই মেদিনীপুরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপস্থিত ছিলেন মাইতি পরিবারের শুভানুধ্যায়ী ড. মৌসম মজুমদার, ড.রিঙ্কু চক্রবর্তী, সুজন বেরা, অঞ্জন মণ্ডল, সুভাষ জানা, সুদীপ কুমার খাঁড়া,চঞ্চল হাজরা,সুতপা বসু,শবরী বসু, অপূর্ব কুমার জানা, সৌমেন গায়েন,ভাস্করব্রত পতি,অরুণ কুমার সাউ সহ অন্যান্যরা। গোটা কর্মসূচি রূপায়ণে 
সহযোগিতায় ছিলেন মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্য-সদস্যারা। কুইজ কেন্দ্রের সদস্য সদস্য আলোক মাইতি জানান, 'আমাদের সংগঠন এভাবেই বাড়ির আনন্দ সমাজের সকলের সঙ্গে মিলেমিশে ভাগ করে নিতে শিখিয়েছে। তাই যাঁদের কেউ নেই, সেইসব অনাথ ছেলেদের সাথে নিয়ে নিজের ছেলের জন্মদিন পালন করলাম অন্যভাবে'। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ড. মৌসম মজুমদার জানান, একটা দিন বাড়িতে কেক কেটে উৎসব করে বা রেস্টুরেন্টে গিয়ে জন্মদিন পালনের আনন্দের থেকে অনাথদের একবেলা পেটপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া বেশি আনন্দের। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো বেশি আত্মিক'। 
এদিন অনাথ আশ্রমের ২৫ জন জন আবাসিকদের জন্য সিলেবাস অনুযায়ী বিদ্যালয়ের যাবতীয় পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হয়। অষ্টম শ্রেণীর শুভম দাস, সৌম্যজিত জানা, দ্বিতীয় শ্রেণীর অভিষেক প্রামানিক, সপ্তম শ্রেণীর কৃষ্ণকান্ত দাস, দীপ ঠাকুররা খুশি নতুন বই পেয়ে। সেইসাথে আয়োজন করা হয় নানা ধরনের খেলাধুলা। অনাথ আশ্রমের ছেলেদের সাথে সংগঠনের শিশুরা ও সদস্যরা মেতে ওঠেন গুলি চামচ, ক্রিকেট, ডিসকাস, বল থ্রো, ফুটবল,লঙ জাম্প ইত্যাদি খেলায়। এদিন প্রকাশিত হয় কুইজ কেন্দ্রের এবছরের ক্যালেন্ডার।সবশেষে সবাই মিলে একসাথে কেক কাটেন এবং প্রীতিভোজ সারেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন