কোলাঘাটের বিভিন্ন পুজো মন্ডপের প্রায় পঞ্চাশজন ঢাকি একটি পুজোর উদ্বোধন করে এক সামাজিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।

ঢাক বা ঢাকি বাদ দিয়ে পূজোর কথা ভাবাই যায় না। শাস্ত্রমতে এবং পূজোর আনন্দে ঢাকের বাদ্যি হল অবিচ্ছেদ্য অংশ। অথচ বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সেই ঢাকিরা বিভিন্ন ভাবে অবহেলিত, বঞ্ছিত হয়ে চলেছেন।পূজোর কদিন মশা চাপড়ে প্যান্ডেলেই রাত্রিবাস থেকে অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া। ভোর থেকে রাত, পূজোর সময় নির্ঘন্ট মেনে ঢাক বাজানোর গুরুদায়িত্ব পালন করেন। উৎসবের কটাদিন বাড়ির লোকের সাথে দেখা পর্যন্ত হয় না। কিছু ব্যাতিক্রম কমিটি ছাড়া , মন্ডপে ঢাকিরা কি খাচ্ছেন, কোথায় ঘুমাচ্ছেন, কেমন আছেন তা কজন খোঁজ রাখেন!আমরা সবাই যখন আনন্দে মেতে উঠি, 
তখন এক বেশে মন্ডপে মন্ডপে ঢাক বাজায় ঢাকি।

এই চেতনা থেকেই এবার কোলাঘাটের সংকেত ক্লাব তাদের একান্নতম বর্ষের পুজোয় এলাকার প্রায় সবকটি পুজো মন্ডপের ঢাকিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন আজ ১৫ই অক্টোবর রবিবার দেবীপক্ষের দ্বিতীয় দিনেই। 

এলাকার প্রায় ৩২ টি পুজো মন্ডপের প্রায় ৫০ জন ঢাক বাদ্যকারদের সংবর্ধনা দেওয়া হল এই মন্ডপেই। ফুল মালা, চন্দনের ফোটা, উত্তরীয়র পরিয়ে বরণ করে নেওয়ার পর ঢাকিদের হাতে উপহার সম্মানে তুলে দেওয়া হয় নানারকম নতুন বস্ত্র, উৎসবের বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী এবং সাধ্যমত নগদ অর্থ। 
এরপর এই ঢাকিরাই তাঁদের ঢাকে পূজোর বোল বাজিয়ে এবং মঙ্গলদ্বীপ প্রজ্জ্বলন করে এই মন্ডপের উদ্বোধন করলেন।
এদিন শুরুতেই প্রতিমার আবরণ উন্মোচন করেন তপতী পাবলিশার্সের প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট সমাজকর্মী রিঙ্কু চক্রবর্তী, শিক্ষারত্ন দম্পতি গৌতম বোস এবং আলপনা বোস প্রমূখ ব্যাক্তিবর্গ।

দেবীপক্ষের এই বিশেষ মুহূর্তে কম করে পঁচিশ জন মানুষ মরনোত্তর চক্ষুদান এ অঙ্গিকার করেছেন । এই পূজোয় প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার জমজমাট ডাকের সাজে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী ঘরানায় করা হয়েছে প্রতিমা।সমগ্র আয়োজনের বাজেট প্রায় ৮ লক্ষ টাকা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন